বাংলাদেশ সুপ্রীম কোর্ট || মুদ্রাক্ষরিক তথা অফিস সহকারী (15-03-2025) || 2025

All Written Question

বায়ু দূষণ ও বাংলাদেশের প্রস্তুতি

বায়ু দূষণ বাংলাদেশের অন্যতম গুরুতর পরিবেশগত সমস্যা, যা জনস্বাস্থ্য ও জীববৈচিত্র্যের ওপর মারাত্মক প্রভাব ফেলছে। বিশেষ করে ঢাকা, চট্টগ্রাম, নারায়ণগঞ্জ ও গাজীপুরের মতো শিল্পায়ন ও নগরায়ণের এলাকাগুলোতে দূষণের মাত্রা অত্যন্ত বিপজ্জনক পর্যায়ে পৌঁছেছে। ইটভাটা, যানবাহনের কালো ধোঁয়া, নির্মাণকাজের ধুলাবালি, এবং কলকারখানার নির্গমন বায়ুর মানকে ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (WHO) মানদণ্ড অনুযায়ী, বাংলাদেশের বায়ুর গুণগত মান বেশিরভাগ সময়ই অত্যন্ত নিম্নমানের থাকে, যা শ্বাসকষ্ট, ফুসফুসের রোগ, হৃৎপিণ্ডজনিত সমস্যা ও অকাল মৃত্যুর কারণ হতে পারে।

বায়ু দূষণ রোধে সরকার ও বিভিন্ন সংস্থা বেশ কিছু পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। পরিবেশ সংরক্ষণ আইন প্রয়োগের পাশাপাশি ইটভাটাগুলোতে পরিবেশবান্ধব প্রযুক্তির ব্যবহার নিশ্চিত করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এছাড়া, ঢাকাসহ বিভিন্ন শহরে গাছ লাগানোর প্রচার, যানবাহনের নির্গমন নিয়ন্ত্রণ, ও নির্মাণকাজে ধুলা নিয়ন্ত্রণের জন্য বিশেষ নীতিমালা তৈরি করা হয়েছে। তবে কার্যকরভাবে বায়ু দূষণ কমাতে সরকারি-বেসরকারি উদ্যোগের পাশাপাশি জনসচেতনতারও বিকল্প নেই। উন্নত বর্জ্য ব্যবস্থাপনা, গণপরিবহন ব্যবস্থার উন্নয়ন এবং নবায়নযোগ্য জ্বালানির ব্যবহার বাড়ানোর মাধ্যমে বাংলাদেশ একটি সুস্থ ও টেকসই পরিবেশ গড়ে তুলতে সক্ষম হবে।

বাঙালি সংস্কৃতির উন্নয়নে গণমাধ্যমের ভূমিকা

গণমাধ্যম বাঙালি সংস্কৃতির বিকাশ ও সংরক্ষণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। টেলিভিশন, রেডিও, সংবাদপত্র এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম বাঙালি ঐতিহ্য, সাহিত্য, সংগীত, নৃত্য ও লোকসংস্কৃতিকে জনসাধারণের সামনে তুলে ধরে। বিশেষ করে একুশে ফেব্রুয়ারি, বাংলা নববর্ষ, বিজয় দিবস ও স্বাধীনতা দিবসের মতো জাতীয় উৎসবগুলো গণমাধ্যমে বিশেষ গুরুত্ব পায়, যা নতুন প্রজন্মের মধ্যে সংস্কৃতিচর্চার আগ্রহ বাড়ায়।

গণমাধ্যমের মাধ্যমে হারিয়ে যাওয়া লোকসংস্কৃতি, পল্লীগীতি, বাউল গান, নাটক ও শিল্পকলাকে পুনরুজ্জীবিত করা সম্ভব হয়েছে। নাটক, চলচ্চিত্র ও সাহিত্যভিত্তিক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে বাংলা ভাষা ও সাহিত্যচর্চার প্রতি আগ্রহ সৃষ্টি করা হচ্ছে। পাশাপাশি, তথ্যপ্রযুক্তির বিকাশের ফলে অনলাইন প্ল্যাটফর্মেও বাঙালি সংস্কৃতি বিশ্বব্যাপী প্রচারিত হচ্ছে। তবে, বিদেশি সংস্কৃতির প্রভাব থেকে নিজেদের ঐতিহ্য রক্ষা করতে হলে গণমাধ্যমকে আরও দায়িত্বশীল হতে হবে। দেশীয় সংস্কৃতির প্রচার-প্রসারে সুস্থ ও গঠনমূলক গণমাধ্যম চর্চা নিশ্চিত করা গেলে, বাঙালি সংস্কৃতি আরও সমৃদ্ধ হবে এবং ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য সংরক্ষিত থাকবে।